মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দুই কিলোমিটারের মধ্যেই ফসলি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করে অবৈধভাবে ইট পোড়াচ্ছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ঠিকাদার। আইন লংঘন করে গত কয়েক বছর ধরে ইট পোড়ানোর কাজ চলছে ওই অবৈধ ইট ভাটায়। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য ওই প্রভাবশালী অবৈধভাবে তার ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে গেলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর পূর্বে পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের জনবসতি এলাকা নাপিতখালীর মাঝখানে ফসলি জমিতে ওই অবৈধ ইটভাটাটি স্থাপন করেছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী ঠিকাদার। ওই ইটভাটার মালিকের বাড়ি টইটং ইউনিয়নেই।
জানা যায়, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ ইরেজীতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও ফসলি জমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো সড়ক ও মহাসড়ক থেকে অর্ধকিলোমিটার দূরত্বে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকারী আইন অমান্য প্রায় দুই একর ফসলি জমির মাঝ খানে প্রভাবশালী ঠিকাদারের মালিকানাধীন ইট পোড়ানোর অবৈধ ভাটাটি গড়ে তোলা হয়েছে। বিভিন্ন জমি থেকে টপ সয়েল এনে বিশাল আকৃতির স্তুপ করে রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা ইট প্রস্তুত করতে ব্যস্ত। ইট ভাটার পার্শ্বে টইটং ইউনিয়নের নাপিতখালীসহ কয়েকটি গ্রামের শত শত বাড়ি ঘর ও নানান প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। ইটভাটা থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে একটি স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। এছাড়া ভাটা থেকে মোটো পথে অর্ধ কিলোমিটার দুরত্বের মধ্যে পেকুয়া-বাঁশখালী-আনোয়ারা-চট্টগ্রাম (এবিসি) আঞ্চলিক মহাসড়ক, ইটভাটার সাথে লাগোয়া এলজিইডি’র অধীন নাপিতখালী-টইটং বাজার সংযোগ সড়ক রয়েছে। সরকারী আইন অমান্য করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে বলে এলাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয় একাধিক কৃষক অভিযোগ করেছেন, এ ইট ভাটার কারনে ফসলি জমি ও বীজ বৈচিত্র হুমকির মূখে পড়েছে। ইটভাটায় মাটি আনায়নের কাজে চলাচলরত ডাম্পারের কারনে প্রচন্ড ধুলাবালি উড়ে এবং ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ওই প্রভাবশালী অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে ফসলির মাঝখানে ইটভাটা স্থাপনা করে আইন লংঘন করছেন।
ফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের কারণ জানতে চাইলে ওই প্রভাবশালী ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজারের উপ-পরিচালক নুরুল আমিন বলেন, ‘পেকুয়ার অবৈধ ইটভাটা সমূহে শিগগিরই অভিযোন পরিচালনা করা হবে।’
পাঠকের মতামত: